প্রকাশ :
২৪খবর বিডি: ' বিদেশে অর্থ পাচারকারীসহ তাদের মদতদাতাদের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রশ্ন— এরকম কতজন পি কে হালদার আছে? আমরা কিছুদিন আগে দেখেছি, হাজার হাজার কোটি টাকা তারা দেশ থেকে লুট করে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে।”
* রবিবার (১৫ মে) রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই দাবি জানান। বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের সম্মানে বিএনপি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবং তাদের বৌদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ত্রিপিটক পাঠ করা হয়। এরপর কমলাপুর আন্তর্জাতিক ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারের বিদর্শাচার্য এস শাসনবংশ মহাথের বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রার্থনা করেন।
' ফখরুল বলেন, ‘আমরা জানতে চাই, এইভাবে (পি কে হালদারের মতো) কত টাকা পাচার হয়েছে। একদিনে তো পাচার হয়নি। কিভাবে কোন পদ্ধতিতে পাচার হলো, কারা তার সঙ্গে জড়িত ছিল, কারা মদত দিয়েছে- সেই বিষয়গুলো পরিষ্কার করে জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য আমরা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।'
' মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে— এই যে দুর্নীতি হচ্ছে, চুরি হচ্ছে, ডাকাতি করে অর্থ পাচার করা হচ্ছে তা অবশ্যই তদন্ত করে বের করে জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।'
'বড় বড় দুর্নীতিবাজ যারা বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত— তদন্ত করে তাদেরকে সামনে আনতে হবে, আইনের আওতায় আনতে হবে।'
* বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বিএনপি ও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানান দলটির মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘আজকে নিশ্চয়ই খবরের কাগজ খুলে দেখেছেন যে, একজন পি কে হালদার, যিনি হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে তাকে পার্শ্ববর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটা ভালো কথা।
/ বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের মদতদাতাদের তালিকা প্রকাশের দাবি ফখরুলের /
* আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজেই ফরিদপুরের সম্মেলনে বক্তৃতায় বলেছেন, হাজার হাজার কোটি টাকা যারা পাচার করেছে তাদেরকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়া হবে না। তার মানে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগের লোকেরা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে।'
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘এই দুঃসহ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে হলে আমাদের সকল ধর্মের, মতের, রাজনৈতিক দলের লোকদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেরকে (সরকার) পরাজিত করতে হবে।”
' আসুন আমরা সবাই মিলে একসাথে এক জোটে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ সরকার— যারা আমাদের দেশে জোর করে ক্ষমতায় চেপে বসে আছে তাদেরকে সরিয়ে এখানে সত্যিকার অর্থে একটি নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক একটা সংসদ এবং সরকার গঠন করি— এটাই হচ্ছে আমাদের এখন সবচেয়ে বড় কাজ। এই বড় কাজটার জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আসুন এই পবিত্র দিনে আমরা এই শপথ গ্রহণ করি।'
পরে মেরুল বাড্ডা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের সুনন্দ মিত্র থের বক্তব্য রাখেন।
* বিএনপির সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক দীপেন দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও জিয়া পরিষদের নেতা সুভাষ চন্দ্র চাকমার সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, গৌতম চক্রবর্তী, জন গোমেজ, অমলেন্দু দাস অপু, আবদুল বারী ড্যানী এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের তরফ থেকে মনীষ দেওয়ান, সুশীল বড়ুয়া, উদয় কুসুম বড়ুয়া, প্রবীণ চন্দ্র চাকমা, চন্দ্র গুপ্ত বড়ুয়া, সনত তালুকদার, রনজিত বড়ুয়া, অনিমেষ চাকমা রিংকু, জয়ন্ত বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া, পারদর্শী বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন।
' এই অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্ত কুমার কুন্ড, বীথিকা বিনতে হোসাইন, তরুণ দে’সহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে মিষ্টি দিয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের আপ্যায়ন করা হয়।'